জীতেন্দ্রর ‘ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন’ নিয়েও বিতর্ক থামছে না

0
514

ডেটলাইন নিউজ ডেস্কঃ আসানসোল পুর  প্রশাসকের পদ ও দলের জেলা সভাপতির পদ ছেড়ে দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে খোলা ময়দানে লড়াইয়ে নেমে পড়েছিলেন তিনি। প্রথমে কেন্দ্র-রাজ্য রাজনীতির কারনে আসানসোলের উন্নয়নে কেন্দ্রের টাকা না পাওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এবং তারপর দুর্গাপুরের সগরভাঙার গ্রাফাইট কারখানার গেটের সামনে দলের শ্রমিক সমাবেশের মঞ্চ থেকে তীব্রভাষায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সরাসরি আক্রমন। আর তারপরেই তৃণমূল ছেড়ে আসা শুভেন্দু ব্যানার্জীর সঙ্গে কাঁকসায় আরও এক বিদ্রোহী তৃণমূল সাংসদ সুনীল মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে মিটিং করে বুঝিয়ে দেন তিনি আর তৃণমূলে থাকতে চান না। তবে বিজেপিতে যেমন যাওয়ার কথা স্পষ্ট করেননি তেমনই বিধায়ক পদ এখনই ছাড়ছেন না বলেও জানান। এরপরই তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র পান্ডবেশ্বরে দলের ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিধায়কের হরিপুরে সদ্য নির্মিত কার্যালয় দখল করে নেওয়ার ঘটনা ঘটতেই জীতেন্দ্র তেওয়ারী সরাসরি দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে দেন,তিনি আর কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা আলোচনায় যাবেন না। কারন হিসেবে জানিয়েছিলেন,একই সঙ্গে তাঁর দফতরে হামলাবাজি ও অফিস দখল করার ঘটনা ঘটবে আবার অন্যদিকে আলোচনায় ডাকা হবে এটা হতে পারে না। মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কিছুটা হতাশার সুরেই বলেছিলেন প্রয়োজনে রাজনীতি আর না করে ফের নিজের আইন পেশায় ফিরে যাবেন। এরমধ্যেই আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন জীতেন্দ্র তেওয়ারীকে বিজেপিতে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর আপত্তি আছে। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর বিজেপিতে যাওয়ার রাস্তাও কার্যত বন্ধ হয়ে যায় বলেই মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় তিনি তৃণমূলে থেকে যাওয়াকেই শ্রেয় বলে মনে করেন বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারনা। বাস্তবে সেটাই করলেন জীতেন্দ্র তেওয়ারী। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভোল পাল্টে নিজের যাবতীয় অভিযোগ ও ক্ষোভবিক্ষোভকে স্রেফ ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে তৃণমূলেই থাকার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসকে। কলকাতায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন দিদি তাঁর আচরনে যে দুঃখ পেয়েছেন তার জন্য তিনি দিদির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আগের মতোই দলের হয়ে কাজ করতে চান। এমনকি তিনি যে সব পদে ইস্তফা দিয়েছেন সেই পদগুলি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদনও করেছেন। কিন্তু গত দুদিনের ঘটনাপ্রবাহ তাঁকে অনেকটাই কোনঠাসা করে দিয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ। এই অবস্থায় জেলার সভাপতি ও আসানসোলের পুর প্রশাসকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি পুনরায় দল তাঁকে ফিরিয়ে দেবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এছাড়াও হটাৎ বিদ্রোহ করে ফের দলে ফিরে আসার বিষয়টিকেও দলের কর্মীরা আগের মতোই মেনে নেবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারন দলের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকেই একটি গোষ্ঠি সক্রিয় রয়েছে। জীতেন্দ্র তেওয়ারীর দল ছাড়ার কথা জানার পরেই সেই গোষ্ঠী আরও বেশি সক্রিয় হয়ে বিধায়কের অফিস দখল ও তাঁর পোস্টার ছিড়ে দেওয়ার মতো ঘটনার মধ্যেই বার্তা দিয়েছে তারা জীতেন্দ্রকে চাইছেন না। তাই জীতেন্দ্র তেওয়ারীর ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন নিয়েও নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুরের তৃণমূল মহলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here