ডেটলাইন কলকাতাঃ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ থাকায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট পেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ভোটের আগে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা যায় না, তাই ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই বাজেট পেশের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি নজির সৃষ্টি হল।পশ্চিমবঙ্গের প্রথম কোনও মহিলা হিসাবে আজ বিধানসভায় বাজেট পেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ২০ বছর পর বাজেট পেশ করলেন তিনি। এর আগে ২০০১ সালে সংসদে রেলমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পেশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়েও নজির গড়েছিলেন তিনি।কারন প্রথম কোনও মহিলা রেলমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পেশ করেছিলেন। সংসদে প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পেশ করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধি। ভোট অন অ্যাকাউন্টসে কোনও ব্যয় বরাদ্দ থাকবে না। বাজেটে কি থাকতে পারে তা নিয়ে জল্পনা ছিল যদিও রাজ্যবাসীকে নিরাশ করেননি মুখ্যমন্ত্রী।‘বঞ্চনা সত্ত্বেও আমরা বরাবরই জনমুখী বাজেট পেশ করি’, একুশের ভোটের আগে সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের পর একথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একুশের ভোটের আগে গরিব, আদিবাসীদের জন্য নয়া প্রকল্পের যেমন সূচনা করল মমতা সরকার, তেমনই কর্মসংস্থানেও নয়া ঘোষণা করা হল।নেতাজীর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নিউটাউনে আজাদ হিন্দ স্মারক তৈরি হবে। এর জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পাশাপাশি, নেতাজীর নামে প্রতি জেলায় একটি করে ‘জয় হিন্দ ভবন’ নির্মাণ করা হবে। নেতাজী সম্পর্কিত পঠন পাঠন, গবেষণা ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভবনগুলি ব্যবহৃত হবে। ‘নেতাজী ব্যাটেলিয়ান’ নামে একটি বাহিনীর নামকরণ হবে কলকাতা পুলিশে। রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা করার জন্য একটি যোজনা কমিশন গঠনের কথাও এদিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারও নাম দেওয়া হবে নেতাজীর নামে। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫ কোটি। যুব সম্প্রদায়ের বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ‘তরুণের স্বপ্ন’ নামে এক সরকারি কর্মসূচির কথাও এদিন বাজেটে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।এক নজরে এই বাজেট এই রকম – স্কিল ডেভলপমেন্টে গোটা দেশে পশ্চিমবঙ্গ ১ নম্বরে। দারিদ্র দূরীরকণেও বাংলা ১ নম্বরে। সাঁওতালি ভাষার জন্য ৫০০ টি স্কুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই স্কুল গুলোর জন্য ১৫০০ প্যারা টিচার নিয়োগ হবে বলে জানান তিনি। তপসিলি জাতি/উপজাতিদের মধ্যে ১০০ টি ইংরেজি স্কুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরজন্য বরাদ্দ করেন ৫০ কোটি টাকা। নেপালি, উর্দু ও হিন্দু ভাষার জন্য ১০০ টি স্কুল আর ৫০০ টি প্যারাটিচারের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী অর্থবর্ষে মাদ্রাসার জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা পুলিশে নেতাজি ব্যাটালিয়নের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিউটাউন থেকে ইএম বাইপাস পর্যন্ত নতুন উড়ালপুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রুবি থেকে কালিকাপুর পর্যন্ত উড়ালপুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বছরের দুবার করে দুয়ারে কর্মসূচির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাইকপাড়া থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত উড়ালপুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আমির আলী রোড থেকে গুরুসদয় দত্ত রোড পর্যন্ত উড়ালপুলের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুর থেকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড পর্যন্ত উড়ালপুলের ঘোষণা। করোনার কারণে পরিবহণ ক্ষেত্রে রোড ট্যাক্স মুকুবের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটন শিল্পে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। রাজারহাটে একাধিক IT সংস্থাকে জমি দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দুই বছরের মধ্যে অন্ডাল বিমানবন্দরকে রাজ্যের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। দেড় কোটি কর্মসংস্থান হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী অর্থবর্ষে ২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব সরকারের।রাজ্যে ৪৬ হাজার কিমি গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ আর ১০ হাজার কিমির রাস্তার সংস্কারের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী পার্শ শিক্ষকদের অবসরে ৩ লক্ষা টাকা দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। আজাদ হিন্দ স্মারকের জন্য ১০০ কোটি টাকার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী।