ফরিদপুরে শিক্ষক খুনের কারন নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে

0
1205

ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ ফরিদপুরের রায়পাড়ার একটি বাড়িতে বহিরাগত দুই দুষ্কৃতীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন তপন মুখার্জী(৬৪) নামে ভিড়িঙ্গি টিএন ইনস্টিটিউশনের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। গতকাল রাখী উৎসবের দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটে যাওয়া ঐ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। দুজনের মধ্যে প্রদীপ চৌহান নামে এক দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও অন্যজন পলাতক। আজ ধৃতকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। ঘটনার সময়ে তপনবাবু ছাড়াও বাড়িতে ছিলেন তার বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং কলেজ পড়ুয়া মেয়ে শিবানি। তপনবাবুর স্ত্রী সুনন্দাদেবী ইসিএলের কাজোড়া হাসপাতালে নার্সের কাজ করেন। নাইট শিফট থাকায় তাই তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে খবর পেয়ে তিনি চলে আসেন। সুনন্দাদেবীর অভিযোগ,সম্পত্তির লোভে তার মেয়েকে অপহরন করতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। এর আগেও মেয়েকে কিডন্যাপ করার হুমকি দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সে সময় থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছিল। তবে কারা হুমকি দিয়েছিল বা কারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করছেন এই প্রশ্নে পরিস্কার করে তিনি কিছু বলতে চাননি। শুধু জানিয়েছেন স্থানিয় দুএকজনের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের কেউ রয়েছে। অভিযুক্ত প্রদীপ চৌহানের সঙ্গে শিবানির নাকি ফেসবুকে আলাপ হয়। তারপর থেকেই মেয়েকে ফোনে উত্তক্ত করা হতো বলে সুনন্দাদেবীর অভিযোগ। তিনি আরও জানান,মাস দুয়েক আগেও একবার ফরিদপুরের বাড়িতে তারা হামলাও চালায়। সেবারও ফরিদপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি,গতকাল রাতে মেয়েকে অপহরন করতে আসে দুস্কৃতীরা আর তাদের বাধা দিতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্বামীর। এতো গেল মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ। অন্যদিকে পুলিশের জেরায় অভিযুক্ত প্রদীপ যা বলেছে তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। জানা গেছে,উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা প্রদীপ প্রায় দুর্গাপুরে এসে ফরিদপুরের কাছেই একটি হোটেলে থাকত। সেখান থেকেই সে শিবানির সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। নার্সের কাজে নাইট ডিউটির জন্য শিবানির মা প্রায়দিন রাতে বাড়িতে থাকতেন না। অন্যদিকে তপনবাবুও রাত আটটার পর ঘুমিয়ে পড়তেন। এই পরিস্থিতিতে তাকে নাকি ফোন করে বাড়িতে ডেকে নিত শিবানি। আবার মা ফেরার আগেই ভোরবেলায় চলে যেত প্রদীপ। রবিবারের আগেও দুদিন সে এভাবেই শিবানির সঙ্গে রাত কাটিয়েছে বলে জানায়। কিন্তু রবিবার রাতে তাদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেন তপনবাবু। তিনি বাধা দিতে গেলে প্রদীপ তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। স্বাভাবিকভাবেই সুনন্দাদেবীর অভিযোগ কতটা সত্যি তা নিয়ে রহস্যের সঞ্চার করেছে ধৃত প্রদীপ চৌহানের বক্তব্য। ফলে খুনের মূল কারণ নিয়ে ধোয়াশা দেখা দিয়েছে। যদিও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদি জানিয়েছেন,পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আসল কারন ঠিক বের হয়ে আসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here