ডেটলাইন বর্ধমানঃ জেলা সফরে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে মুর্শিদাবাদ এবং তারপর পূর্ব বর্ধমান সফরে আসেন। এখানে এদিন দুটি সভা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রথমে কালনার বৈদ্যপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ মাঠে সভা থেকে তিনি সরাসরি আগামী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বক্তব্য রাখেন। এখানে তিনি বিজেপিকে রাজ্য থেকে বিদায় দেওয়ার স্লোগান তুলে সভায় সমবেত জনতার প্রতি বলেন, “বিজেপি থেকে সাবধান। বিদায় দাও, বিদায় দাও, বিজেপিকে বিদায় দাও। ফিরিয়ে দাও ফিরিয়ে দাও, আমার দেশ ফিরিয়ে দাও। বিজেপি ভারতকে শ্মশানে পরিণত করেছে, এবার বাংলাকেও শ্মশানে পরিণত করতে চাইছে। এটা হতে দেবেন না। ওরা ভন্ড তপস্বীর দল। শুধু কুৎসা করে। নিষ্ঠুর, নির্দয় একটা দল। মিষ্টি কথা ওরা বলতে পারে না। দূর্গা পূজা করে না, কালী পূজা করে না, লক্ষ্মী পূজা করে না। রবীন্দ্রনাথকে চেনে না, বিদ্যাসাগরকে চেনে না, তাঁর মূর্তি ভাঙে , ধর্মে ধর্মে, মানুষে মানুষে শুধু বিভেদ করে এই বিজেপি দল।” পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শান্তিতে বাড়ির বাইরে যেতে হলে, স্বস্তিতে থাকতে হলে তৃণমূলী আপনার বন্ধু।তৃণমূলে যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে আমি তাঁদের কান মলে দেব। কিন্তু আপনারা তৃণমূলে ভরসা রাখুন ।” একই সঙ্গে তিনি বামদেরও ঠুকে বলেন, “বাম আর শ্যাম, নেই কো কোনও দাম।”
অন্যদিকে বর্ধমানের সাধনপুর কৃষি খামার ময়দানে মাটি উৎসবের উদ্বোধন করে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান বছরে দুবার করে দুয়ারে সরকার হবে।জুন মাসের পরও বিনা মূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিন বছর পরে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের রিনিউ করা হবে। মাটি উৎসবের মঞ্চ থেকে বিজেপিকেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন দাঙাবাজ দল হল বিজেপি।সুতরাং বাংলাকে শান্ত রাখতে বিজেপিকে ভোট নয়।সব ভোট পড়বে তৃণমূলে। তিনি বলেন মাটি গাথা নামে ট্রেনিং সেন্টার তৈরি হবে বর্ধমানের কৃষিখামারে। জেলায় বাতাসা কদমা তৈরির জন্য ট্রেনিং তৈরি করা হয়েছে।তিনি বলেন জেলায় ৫৫ টি রাস্তা তৈরী হবে।২০১২ সালে বর্ধমানের পানাগড়ে প্রথম মাটি উৎসব শুরু হয়।তারপর ২০১৪ সালে ইউনাইটেড একে স্বীকৃত দেয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যে ৫৫ লক্ষ কৃষক কৃষকবন্ধুতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এবছর জুন মাস থেকে ৬ হাজার টাকা পাবেন কৃষকবন্ধুতে অন্তর্ভুক্ত কৃষকরা।বাংলার শস্যবীমা যোজনায় কোন টাকা লাগে না।সব টাকাটাই রাজ্য সরকার দিচ্ছে বলে জানান তিনি। ধান দিন চেক নিন।বাংলা সব থেকে বেশী ধান উৎপাদন করে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ধান কেনা নিয়ে এক হাত নেন।আড়াই কোটি টন ধান উৎপাদন হয়।তবু বাংলা ব্রাত্য। কেন্দ্রীয় সরকার ৪৯ লক্ষ টন ধান কিনেছে এই রাজ্য থেকে। অথচ দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকে বেশী ধান কিনেছে কেন্দ্র। তিনি বলেন কেন্দ্র তিনটে আইন নিয়ে এসেছে। বর্ধমানের কৃষিখামারে বেশী করে ট্রেনিং দেবার ব্যবস্থা করতেও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।