পাগল সাজিয়ে নেশামুক্তি কেন্দ্রে আটকে রাখা যুবককে উদ্ধার করল হিউম্যান রাইটস সদস্যরা

0
698

ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ বিবাহিত এক যুবককে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মিথ্যা অভিযোগে প্রায় দেড় মাস ধরে পূর্ব বর্ধমানের ইছলাবাদ এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নেশামুক্তি কেন্দ্রে আটকে রেখে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ঘটনা হল, এই নির্মম কান্ডের নেপথ্যে আছেন আটকে থাকা যুবকেরই বাবা। শেষ পর্যন্ত রানীগঞ্জের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সাহায্যে আটক থাকা যুবককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ঘটনায় জানা গেছে, ২০১২ সালের ২০ জানুয়ারী পূর্ব বর্ধমান জেলার বাদামতলা এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর সিংয়ের ছেলে অশোক সিংয়ের সঙ্গে বিবাহ হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলার উখরার বাসিন্দা সিন্ধু সিংয়ের কন্যা দীপিকার। অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই দীপিকার উপর তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করতে থাকে। এই অবস্থায় ২০১৫ সালে দীপিকার একটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর সেই অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তা সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে দীপিকা ২০১৬ সালে পান্ডবেশ্বর থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে। এরপরই নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্বামী অশোক সিং স্ত্রী দীপিকা ও তাদের কন্যাকে নিয়ে উখরাতেই ভালোভাবে সংসার করতে থাকেন। কিন্তু মাস দেড়েক আগে বিশেষ কাজে অশোক পূ্র্ব বর্ধমানের বাদামতলা এলাকায় গেলে সেখানে তাঁর বাবা শঙ্কর সিং কয়েকজন আত্মীয়সহ স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজনকে পুলিশ সাজিয়ে অশোককে জোর করে রাস্তা থেকে তুলে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে আটকে রাখে এবং তাঁর উপর অত্যাচার শুরু হয়। অভিযোগ নিজের ছেলেকে মানসিক ভারসাম্যহীন করে পাগল সাজাতে চেয়েছিল শঙ্কর সিং। কারন হিসেবে জানা গেছে, পূত্রবধূ দীপিকা শ্বশুরবাড়ীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের যে মামলা করেছিল তারই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য শঙ্কর সিং এই কাজ করে। এদিকে স্বামী ফিরে না আসায় নানাভাবে খোঁজ করতে থাকে তাঁর স্ত্রী দীপিকা। বেশ কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন বর্ধমানের ইছলাবাদে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। কিন্তু পুলিশ সহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েও স্বামীকে সেখান থেকে উদ্ধার করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত গত ৭ জুন পুরো ঘটনাটি লিখিতভাবে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রাষ্ট্রীয় চেয়ারম্যান সর্দার জগজিৎ সিংকে জানিয়ে তাঁর স্বামীকে সেখান থেকে উদ্ধারের আবেদন জানায় দীপিকা। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রাষ্ট্রীয় চেয়ারম্যান জগজিৎ সিং তাঁর সংস্থার কয়েকজন সদস্য,স্থানীয় মিডিয়ার কিছু সদস্য এবং পুলিশের সহযোগিতায় বর্ধমানের ইছলাবাদে সেই নেশামুক্তি কেন্দ্রে হানা দিয়ে শেষ পর্যন্ত অশোক সিংকে উদ্ধার করে স্ত্রী দীপিকার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সর্দার জগজিৎ সিং জানিয়েছেন, যে সমাজসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে এবং আর যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here