আরও এক বড় উৎসব-ছট পুজো

0
1143

ডেটলাইন ওয়েব ডেস্কঃ অবাঙালি সম্প্রদায়ের একাংশের এক বড় উৎসব হল ছট পুজো। এই পুজো হল আদতে সূর্যদেব এবং তাঁর পত্নী ঊষাদেবীর পুজো। এই পুজোর প্রচলন পূর্ব ভারতের বিহার-ঝাড়খণ্ডে। পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের একটি বড় অংশেও এই পুজোর প্রচলন রয়েছে। নেপাল ও উত্তর ভারতের বহু জায়গায় ছয় কথাটিকে ছট বলে উচ্চারন করা হয়। কার্তিক মাসের শুক্ল ষষ্ঠির দিন হয় বলেই একে ছট পুজো বলা হয়ে থাকে। ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র ও সীতাদেবী শুল্ক ষষ্ঠির দিনেই সূর্যদেবের আরাধনা করেছিলেন। এছাড়া মহাভারতের আখ্যানের সঙ্গে এই পুজোর যোগ আছে বলে অনেকে মনে করেন। শোনা যায়,অঙ্গদেশের (বর্তমান ভাগলপুর) রাজা হওয়ার পরে সেই অঞ্চলে ধুমধাম করে সূর্যদেবের পুজো ও উৎসবের প্রচলন করেন কর্ণ। সেই উৎসবই কয়েক হাজার বছর পেরিয়ে ছটপুজো হিসাবে পালিত হয়ে চলেছে। ভারতের বাইরে নেপালের কিছু অংশেও এই উৎসব পালিত হয়। সাধারনভাবে ছট একদিনের পুজো মনে হলেও আসলে এটা ধারাবাহিকভাবে চারদিনের ব্রতের মাধ্যমে পালন করা হয়। প্রথম দিনে বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করে স্নান সেরে শুদ্ধাচারে নিরামিষ খাওয়ার রেওয়াজ আছে। একে ‘নহায়-খায়’ বলা হয়। পরদিন থেকে শুরু হয় উপোস। ব্রতীরা দিনভর নির্জলা উপবাস করে সন্ধ্যার পর পুজো শেষ করে ক্ষীরের খাবার খান। একে বলে ‘খরনা’। তৃতীয় দিনে সূর্যাস্তের সময় কোনও নদী বা জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে অন্যান্য ব্রতীদের সঙ্গে অস্তগামী সূর্যকে দুধ অর্পণ করতে হয়। এই আচারকে ‘সন্ধ্যা অর্ঘ্য’ বলে। ব্রতের শেষদিন ঘাটে গিয়ে উদীয়মান সূর্যকে ফের দুধ দান করে উপোস ভাঙা হয়। এই আচারের নাম ‘ঊষা অর্ঘ্য’। ভক্তদের কাছে জানা গেছে,সব মিলিয়ে ছট উপলক্ষে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা নির্জলা উপোস করেন ব্রতীরা। পুজোর প্রসাদ হিসাবে থাকে বাঁশ দিয়ে তৈরি পাত্রে গুড়, মিষ্টি, ক্ষীর, ঠেকুয়া, ভাতের নাড়ু, আখ, কলা, মিষ্টি লেবুসহ নানা ধরনের ফল।  সাধারণত এই পুজো বছরে দু’বার পালিত হয়। প্রথমবার চৈত্র মাসে (একে বলে চৈতী ছট) এবং দ্বিতীয়বার কার্তিক মাসে (এর নাম কার্তিকী ছট)। বিহার, ঝাড়খণ্ডসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ধুমধাম করেই পালিত হয় ছট উৎসব। এরাজ্যের ঐতিহ্য মেনে বাঙালিরাও এই পুজোয় সামিল হন। আনন্দ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here