ডেটলাইন বোলপুরঃ অমিত শাহের পাল্টা রোড শোয়ে এদিন বোলপুরের লজ মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ চার কিলোমিটার পদযাত্রা শেষ হয় জামবুনি মোড়ে। মিছিল শেষে রবি ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোড শোয়ের একদম সামনে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ শতাব্দী রায়। ছিলেন বাউলরা, কীর্তনীয়ারা এবং ঢাকিরা। ঘোড়া নাচ, সাঁওতাল নাচে রোড শো হয়ে উঠেছিল সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের মঞ্চ। রাস্তার দুধারে থাকা মহিলারা শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি দিয়ে বরণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পদযাত্রা শেষে জামবুনিতে এক জনসভাও করেন মমতা। সেখানে তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ এবং বিজেপির সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন,নতুন করে কাউকে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখানোর দরকার নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে দিন গানটা গেয়েছিলেন ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’। সেদিনই কবিগুরু সোনার বাংলা রচনা করে গিয়েছিলেন। সোনার বাংলার সৃষ্টি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের”। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতিকে এভাবেই কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর বক্তব্যে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আক্রমনের লক্ষ্য ছিল বিজেপি। তিনি বলেন, “কু-কথায় অ-কথায় যেভাবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতনকে অসম্মানিত করা হচ্ছে। এমনকি অমর্ত্য সেন পর্যন্ত রেহাই পাননি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মের ৬০ বছর পরে তৈরি করেছিলেন বিশ্বভারতী। আর এই বিজেপির বহিরাগত নেতারা জানেই না বাংলার সংস্কৃতি কি। তাঁরা বলে গিয়েছেন শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ জন্মে ছিলেন”। বক্তব্য প্রসঙ্গে নিজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমি তখন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে প্রথম সাংসদ হয়েছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। প্রধানমন্ত্রীরা সাধারণত বিশ্বভারতীর ‘উপাচার্য’ হয়ে থাকেন। আমি তখন বিশ্বভারতীর সদস্য। সে সময় রাজীব গান্ধীর সঙ্গে প্রথম বিশ্বভারতীতে এসেছিলাম। সে সময় রাজীব গান্ধী যুব সমাজের কাছে যথেষ্ট ভালোবাসার মানুষ ছিলেন। ওইদিন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এক সঙ্গে খেতে বসেছিলাম। ছাত্রছাত্রীরা রাজীব গান্ধীকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জানতে চাইছি আমাদের আইকন কার মতো হওয়া উচিত’। সে সময় আমাকে দেখিয়ে বলেছিলেন উনার মতো। কেন বলেছিলেন জানেন, উনি জানতেন বাংলার মাটিটাকে আমরা খুব ভালোবাসি, বাংলার মানুষকে আমরা ভালোবাসি। আর এখন সেই বিশ্বভারতীর বুকে যখন দেখি প্রাচীর গেঁথে দেওয়া হয়, মানুষের হৃদয়টাকে কারাগারে বন্দি করা হয়। তখন আমি ভালোবাসি না। বলি বাঁধ ভেঙে দাও বাঁধ ভেঙে দাও, ভাঙো। আমার ভালো লাগে না যখন দেখি বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে একটি জঘন্য ধর্মান্তবাদ চলছে। আমরা বিশ্বভারতীকে হৃদ মাঝারে রাখিব ছেড়ে দেব না। বিশ্বভারতীতে এক ঘৃণ্য রাজনীতির আমদানি করা হয়েছে। সারা বাংলার বুকে এক ঘৃণ্য রাজনীতির আমদানি করা হয়েছে। সংকীর্ণ, ঘৃণ্য, বিদ্বেষ মূলক রাজনীতির আমদানি করা হয়েছে”। গতকালই তিনি বলেছিলেন ‘দেশের মানুষকে কি করে বহিরাগত বলি’। কিন্তু এদিন ফের উল্টে সুর শোনা গেল। তিনি বিজেপির নাম না করে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক করে বলেন, “গ্রামে গ্রামে বহিরাগত লোক ঢুকিয়ে কানে কানে ওরা মন্ত্র দেওয়ার চেষ্টা করছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বলছে। এরকম বহিরাগত লোক দেখলে থানায় অভিযোগ দায়ের করুন। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমাদের জানান”।
Latest article
কোক ওভেন থানায় সাড়ম্বরে পালিত হল ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবস
ডেটলাইন দুর্গাপুর,১৫ আগষ্ট: দেশ জুড়ে শুক্রবার নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হল ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবস। পশ্চিমবঙ্গের সব জেলার সঙ্গে গোটা পশ্চিম বর্ধমান...
রাখী পরিয়ে পথ চলতি মানুষদের সম্প্রীতির বার্তা দিল কোক ওভেন থানার পুলিশ
ডেটলাইন দুর্গাপুর,৯ আগস্টঃ প্রতি বছর বাংলা শ্রাবণ মাস মানেই একদিকে কবিগুরুর ২২ শ্রাবণ প্রয়াণ দিবস। আর সেই সঙ্গেই শ্রাবণ পূর্ণিমা মাসের পূর্ণিমায়...
দুর্গাপুরের রাস্তায় চলবে সরকারী এসি বাস
ডেটলাইন দুর্গাপুর,৯ আগস্টঃ পুজোর আগেই দুর্গাপুরের জন্য খুশির খবর। এদিনই সিটি সেন্টারের এডিডিএ ভবনের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে দুর্গাপুর টাউন সার্ভিসের...