প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ

0
622

ডেটলাইন কোলকাতাঃ বাংলা নতুন বছরের শুরুতেই বাংলা সাহিত্য জগতে ইন্দ্র পতন ঘটে গেল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। বয়স হয়েছিল ৯০। রবীন্দ্রনাথ-জীবনানন্দের পরবর্তী সময়ে তাঁর কলমেই সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা আধুনিক কবিতা। একের পর এক কবিতা মুগ্ধ করেছে পাঠককূলকে। তাঁর সময়ে আরও চারজন কালজয়ী কবি ছিলেন। তারা হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বিনয় মজুমদার ও উৎপল কুমার বসু। এদের সঙ্গে শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে পাঁচজনকে বলা হতো বাংলা আধুনিক কবিতার পঞ্চপাণ্ডব। প্রথম চারজনকে আগেই আমরা হারিয়েছি। এবার পঞ্চপান্ডবের শেষ তারা শঙ্খ ঘোষও চলে গেলেন না ফেরার সেই দেশে। সেই সঙ্গে অবসান হল বাংলা সাহিত্যের একটা যুগেরও। কবির প্রয়াণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিশিষ্টজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী অবিভক্ত বাংলার চাঁদপুরে জন্ম গ্রহন করেন শঙ্খ ঘোষ। বাবা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ ও মা অমলা ঘোষ। তাঁর আসল নাম চিত্তকুমার ঘোষ। প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলা ভাষা নিয়ে স্নাতক পাঠ। তারপর কলকাতা বিশ্বিবদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর। পড়াশোনা শেষে করে অধ্যাপনাকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। অধ্যাপনা করেছেন সিটি কলেজ, বঙ্গবাসী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও পড়িয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৭ সালে আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালায় যোগ দেন তিনি। ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘উর্বশীর হাসি’, ‘ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ’-এর মতো কাব্যগ্রন্থ কবি উপহার দিয়েছেন পাঠকদের। পাঠকদের মন জয়ের পাশাপাশি একাধিক পুরস্কার ও সম্মানও পেয়েছেন তিনি। তাঁর ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন নরসিংহ দাস পুরস্কার।১৯৮৯ সালে ‘ধুম লেগেছে হৃদকমলে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’–র জন্য সরস্বতী পুরস্কার পান।১৯৯৯ সালে পান বিশ্বভারতী দেশিকোত্তম পুরস্কার।২০১১ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০১৬ সালে পান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। কবিতার পাশাপাশি রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রেও তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা ছিল। বহু প্রবন্ধও রচনা করেছেন। কোভিড বিধি মেনে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। কবি শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার সাহিত্য জগতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here