ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ তিন বছরের মাথায় আবারও দুর্গাপুর ব্যারেজের আরও একটি লকগেট বিপত্তির ঘটনায় শহরবাসীর মধ্যে জল সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও পুরসভার তরফে মেয়র দিলীপ অগস্তি আশ্বাস দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর লক গেট মেরামতির জন্য একটু সময় লাগলেও পুরসভা এলাকায় জলের সংকট হবে না। শুক্রবার সকাল থেকেই দুর্গাপুর ব্যারেজের একটি লক গেট ভেঙে সেখান থেকে সব জল বের হয়ে যাওয়ার খবর খুব দ্রুত সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরতেই শহরবাসীর মধ্যে বছর তিনেক আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে টানা প্রায় চারদিনের জল সংকটের স্মৃতি উদ্বেগের সঞ্চার করে। শহরজুড়েই সবার মধ্যে জল সংকটের আশঙ্কাই চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে। তবে খবর পাওয়ার পরই দুর্গাপুর ব্যারেজের পরিস্থিতি দেখতে ছুটে আসেন মেয়র দিলীপ অগস্তি,দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল,৪ নং বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, স্থানীয় কাউন্সিলার শিপুল সাহা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। এছাড়াও দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়ও ব্যারেজ পরিদর্শনে আসেন। তিন বছর আগের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি এদিনের ঘটনার জন্য সরকারের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। যদিও সরকার পক্ষের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বলেছেন, এটা একটা দুর্ঘটনা। মেরামত করার জন্য সব রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য জলের সংকট হবে না। তবে তিনি শহরবাসীর উদ্দেশ্যে জল অপচয় না করার আবেদন করেছেন। এছাড়াও পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাঝিও ব্যারেজের অবস্থা দেখতে এসে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত লক গেট দ্রুত মেরামতির ব্যবস্থা হচ্ছে। তিনিও এই ঘটনায় জলের সংকট হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন শহরবাসীকে। এই ব্যারেজের মোট ৩৬টি লক গেট রয়েছে। ৩১ নম্বর লক গেট ভাঙার প্রচুর পরিমান জল বের হয়ে যাওয়ার পরই মেরামতির জন্য সংস্লিষ্ট বিভাগ তৎপর হয়ে ওঠে। জানা গেছে, কলকাতা থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল আসছে। প্রসঙ্গত, এই ব্যারেজের জলের উপরই নির্ভরশীল পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়া। দুর্গাপুর এবং আসানসোল পুরসভার জল সরবরাহ এই ব্যারেজের জল থেকেই হয়। ফলে ব্যারেজ থেকে এভাবে জল বেরিয়ে গেলে পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলকষ্টের আশঙ্কা দেখা দেয়। অন্যদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাজ্যের সেচ এবং জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, বিকল্প লক গেট লাগানোর কাজ শুরু করা হচ্ছে। রবিবারের মধ্যেই বিকল্প গেট লাগানো হয়ে যাবে জানিয়ে শহরবাসীর জলাভাব হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। এর মধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে জানানো হয়েছে কদিন জল সরবরাহ বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে জল অপচয় না করতেও আবেদন জানানো হচ্ছে। তবে প্রশাসনের আশ্বাস পেলেও আগামী কয়েকদিন পানীয় জল নিয়ে বেশ উদ্বেগের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে শহরবাসীকে।