দেশ জুড়ে পালিত ভারতের সংবিধান প্রণেতা আম্বেদকরজয়ন্তী

0
723

ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ ভারতীয় সংবিধানের মূল স্থপতি ডঃ বি আর আম্বেদকরের আজ ১৩০ তম জন্মদিন। ১৮৯১ সালে আজকের দিনে ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর বর্তমান মধ্য প্রদেশের মহো নামক এলাকায় জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম রামজী মালোজী শাকপাল এবং মাতার নাম ভীমাবাই। তিনি ছিলেন তাঁর বাবা মায়ের ১৪ তম তথা সর্বকনিষ্ঠ পুত্র। আজ তাঁর জন্মদিনে দেশজুড়ে নানা অনুষ্ঠানে দেশবাসী সম্মান ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে ভারতরত্ন এই মহান ভারতীয় সন্তানকে। কঠিন জীবন সংসারে চরম সংগ্রাম করে উঠে আসা ভি আর আম্বেদকর বিশ্ব মানবতার কাছেই এক আদর্শ ব্যক্তিত্ব। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরেই প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জহরলাল নেহেরু স্বাধীন ভারতের সংবিধান রচনার জন্য তাঁকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সংবিধান রচনাকারী বিশেষজ্ঞ দলের তিনি ছিলেন চেয়ারম্যান। প্রায় দু-বছর ধরে লেখা হয় ভারতীয় সংবিধান। সেই সংবিধানে দেশের গরীব ও দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের সামাজিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার দেওয়া হয়েছে তাঁরই উদ্যোগে। যা আজও নানাভাবে বর্ধিত হয়ে চলেছে। নিজের জীবনের আর্থিক ও সামাজিক প্রতিকূলতার লড়াইকে তিনি দেশের গরীব ও সাধারন মানুষদের মধ্যে চেতনার লড়াইয়ে পরিনত করতে পেরেছিলেন। কঠিন বাস্তবের মোকাবিলা করতে গিয়েই তাঁর মধ্যে যে জিদের সঞ্চার হয়েছিল তার জন্যই তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষিত ও জ্ঞানী হয়ে উঠেছিলেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি বিদেশে ইকোনোমিকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশের প্রথম ইকোনোমিকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি এবং প্রথম দুবার ইকোনোমিক্সে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিই ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম আইন মন্ত্রী। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় পৃথিবীর ১০০ জন পন্ডিতের মধ্যে তিনি একজন। সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে প্রথম এবং শুধুমাত্র ইনিই অর্জন করেছেন লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকস থেকে সমস্ত বিজ্ঞান বিষয়ের উপর ডক্টরেট ডিগ্রি। সবচেয়ে অবাক হলেও এটাই সত্যি যে ১৯৩৫ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গঠনের রূপরেখা ও নীতি নির্দেশিকা তিনিই তৈরি করেন। আম্বেদকর ছিলেন একজন দূরদর্শীসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারতবর্ষের জল ও বিদ্যুৎ নীতির প্রবর্তক ছিলেন। কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরের সেচ প্রকল্প গুলির উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় জল কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এছাড়াও কেন্দ্রীয় প্রযুক্তিগত বল পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তিনি সর্বদা শক্তিশালী পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছিলেন। উন্নততর প্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তিনি বিহার এবং মধ্যপ্রদেশকে ভাগ করার প্রস্তাব দেন। পরবর্তী সময়ে তাই দেখা যায় বিহার ভেঙ্গে ঝাড়খন্ড ও মধ্যপ্রদেশ ভেঙ্গে ছত্রিশগড় গঠন করা হয়েছে। এই মহান ভারত সন্তানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আজ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে দুর্গাপুরেও নানা স্থানে তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here