ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার পানাগড়ে এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩৮ একর জমির উপর প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করে একটি পলিফিল্ম কারখানার শিলান্যাশ করেন তিনি। এখানে কাজ শেষ হওয়ার পর অনেক বেকার যুবক-যুবতী কাজ পাবে বলেও তিনি জানান। প্রসঙ্গত, দুই নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে কাঁকসা এবং আউসগ্রাম ব্লকের প্রায় দেড় হাজার একর জমি সংরক্ষিত রয়েছে পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবের জন্য।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক,অনুব্রত মণ্ডল সহ তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। ছিলেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া WBIDC-র চেয়ারম্যান রাজীব সিনহা এবং সরকারী আধিকারিকরা। অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেন, ‘এখন আমার ডেস্টিনেশন শিল্প।’ রাজ্যে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর এবার রাজ্যকে শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক নম্বরে নিয়ে যাওয়াই যে তাঁর লক্ষ্য সেটা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। পানাগড়ে পলি ফ্লিম কারখানার শিলন্যাস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য ইতিমধ্যেই সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে এক নম্বরে পৌঁছেছে। এবার শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বাংলা এক নম্বর হবে। এটা আমি কথা দিচ্ছি৷’ এ দিন পানাগড়ে পলিফিল্ম প্রকল্পের উদ্বোধন করার পাশাপাশি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে জঙ্গল সুন্দরী শিল্প পার্কেরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ একইসঙ্গে দুর্গাপুর, জামুড়িয়া, হাওড়া, জামালপুরের মতো বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু শিল্প প্রকল্পেরও সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ দিনই প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণা করা হল যেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে৷ রঘুনাথপুরে জঙ্গল সুন্দরী শিল্প পার্কে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াতে দু’টি নীতি তৈরি করছে রাজ্য সরকার৷ প্রথমটি হল এথানল উৎপাদনে উৎসাহ দিতে নতুন নীতি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জৈব জ্বালানি হিসেবে এথানলের ব্যবহার বাড়ছে৷ এথানল পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি৷ পেট্রোল , ডিজেলের সঙ্গে মিশিয়ে এথানলকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ জৈব জ্বালানি হিসেবে এথানলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷ ভাঙা চাল দিয়ে এথানল তৈরি হয়৷ চাষিদের আর কম দামে ভাঙা চাল বিক্রি করতে হবে না৷ রাজ্য ধান উৎপাদনে দেশের মধ্যে এক নম্বর৷ আমরা চাষিদের কাছ থেকে ভাঙা চাল কিনে নিলে তাঁদের আয়ও বাড়বে৷’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, এথানল উৎপাদন বাড়লে গ্রামগঞ্জেও প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে৷ গত দশ বছরে রাজ্যে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এর পাশাপাশি বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলন থেকে ১৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে বলেও এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।