নন্দীগ্রাম যেন আবার যুদ্ধক্ষেত্র,শুভেন্দু বনাম তৃণমূলের

0
516

ডেটলাইন নন্দীগ্রামঃ শুভেন্দু অধিকারী জনসভা করছেন কিন্তু সেখানে কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও তৃণমূলের কোন পতাকা নেই এমনটা কেউ দেখেছেন? কিন্তু সেটাই দেখা গেল আজ নন্দীগ্রামে। জনতা আছে। মঞ্চে শুভেন্দু আছেন। কিন্তু কোথাও তৃণমূলের নাম নিশান নেই। উল্টে নিজের বক্তব্যে কারো নাম না করে তৃণমূলকেই নিশানা করলেন তিনি। মঙ্গলবার ছিল নন্দীগ্রামের  হাজরাকাটায় ‘সূর্যোদয় দিবসে’র বর্ষপূর্তি। ‘ভূমি উচ্ছেদ কমিটি’র ডাকে প্রতি বছরের মতো এবারও গড়চক্রবেড়িয়া হাই স্কুল মাঠে শহীদ স্মরণ সভা করলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম মুখ, রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এই মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ নন্দীগ্রামের আন্দোলন কারও নয়, স্বতঃস্ফূর্ত। আমি বহুদিন ধরে এই কর্মসূচিতে আসি, চেনা বামুনের পৈতে লাগে না। ভোটের আগে এলে শুধু হবে না, ভোটের পরেও আসতে হবে।” নন্দীগ্রামের তেখালিতে শহীদ স্মরণের মঞ্চ থেকে তাঁর এই বক্তৃতাই প্রমান করে দিল যে আগামী দিনে তৃণমূল নেতৃত্বকে আরও বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চলেছেন তিনি। নন্দীগ্রাম দিবসে তিনি কি বলেন তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে কৌতুহলের পারদ চরছিল। এদিন এই ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ থেকে নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও এইটুকু বলেছেন, ”আমি জানি সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অপেক্ষা করে আছেন। তারা আমার মুখ থেকে কিছু শুনতে চান। আমি বলব। সব বলব। আমার চলার পথে কোথায় চড়াই-উতরাই,এবার কোন পথ দিয়ে হাঁটব, সব বলব। তবে আজ আমি রাজনৈতিক মঞ্চে আসিনি। নন্দীগ্রামের এই পবিত্র মঞ্চ রাজনীতির জায়গা নয়। এখান থেকে আমি কোনও রাজনৈতিক বার্তা দেব না। রাজনীতির কথা সময় মতো বলব। আর সেটা বলব রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে।” প্রসঙ্গত, এর আগে তিনি দল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এভাবে প্রকাশ্যে দলনেত্রীর ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেননি। এবার সেটাই করছেন। শারদীয়া উৎসবের পর থেকেই জেলায় জেলায় তাঁর অনুগামীদের দ্বারা আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীগুলি ঘিরেই রাজ্য রাজনীতিতে একটা আলাদা মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এদিনের তৃণমূল বর্জিত নন্দীগ্রাম দিবসের এই সভা যেন আসন্ন বিদ্রোহেরই আভাস দিয়ে গেল। এদিকে শুভেন্দুর অরাজনৈতিক কর্মসূচির চাপে পড়েই শাসকদল তৃণমূল বাধ্য হয়ে এবারই প্রথম নন্দীগ্রাম দিবসে সভার আয়োজন করেছে। এটা নিয়েও তৃণমূল নেতৃত্বকে ঠেস দিতে ছাড়েননি শুভেন্দু। তিনি বলেছেন, “এতদিন পরে নন্দীগ্রামকে মনে পড়ল? ভোটের আগে এলে শুধু হবে না, ভোটের পরেও আসতে হবে।” এদিন দেখা গেছে নন্দীগ্রামের সমস্ত শহীদ পরিবারের সদস্যরাই শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ’ বলে শুভেন্দু তাঁর বক্তব্য শেষ করায় এটা নিয়েও রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here