ডেটলাইন দুর্গাপুরঃ ঈদ-ই-মিলাদ-উন-নবী হচ্ছে নবী হজরত মুহাম্মদের জন্মদিন হিসেবে মুসলমানদের কাছে একটি পবিত্র উৎসব।বিশ্বজুড়েই মুসলিমদের কাছে এদিনটি বেশ উন্মাদনার সঙ্গেই পালন হতে দেখা যায়। হিজরি বর্ষের তৃতীয় মাস রবিউল আউয়ালের বারো তারিখে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে মক্কায় জন্ম হয়েছিল নবীর। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে সেটা ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের কাছে এই দিনটি নবী দিবস হিসেবে পরিচিত। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ইসলাম ধর্মের পথ প্রদর্শন হযরত মহম্মদের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মের মানুষরা এদিন বিশেষ প্রার্থনা ও অন্যান্য ধর্মীয় কর্মসূচী পালন করেন। এদেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে দুর্গাপুর, আসানসোলসহ দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া ,বর্ধমান সহ অন্য জেলা গুলিতেও দিনটি উদযাপন করা হয়। দুর্গাপুরের নইম নগর, মেনগেট এলাকা, রায়ডাঙ্গা, সাগরভাঙা, উখরা সহ শহরের একাধিক জায়গায় এই উৎসব পালন করতে দেখা যায়। মসজিদ গুলিকেও সাজিয়ে তোলা হয়। এবার করোনা আবহে কোন শোভাযাত্রা বের না হওয়ায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমেই এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করেন ধর্মপ্রান মুসলিমরা। নবী দিবস উপলক্ষে দুর্গাপুরে এদিন বেশ কয়েকটি জায়গায় স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সগড়ভাঙা মুসলিম পাড়ায় এই শিবিরের আয়োজন করে কাজী নজরুল স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যরা ৷ এই শিবিরে ৬০ জন রক্ত দান করেন। সংগঠনের পক্ষে শেখ আমির জানান,অন্যান্য বছর নবী দিবস উপলক্ষে জুলুস ও ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান করা হলেও এবার করোনা মহামারির কারণে সেই সব কিছু বন্ধ করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।হিউম্যান রাইটস জার্নালিস্ট অফ ইন্ডিয়া দুর্গাপুর শাখার উদ্যোগে দুর্গাপুর মেনগেট উর্দু জুনিয়ার হাই স্কুলে আয়োজিত শিবিরে ১৯ জন রক্তদান করেছেন। এছাড়াও এদিন উখরার মরকাজি মিলাদ কমিটি ধর্ম আলোচনা ও রক্তদানের মাধ্যমে দিনটি পালন করে। এই শিবিরে স্বেচ্ছায় ৫০ জন রক্তদান করেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় উখরা ট্রেকার স্ট্যান্ড চত্বরে। সংগঠনের পক্ষে মহম্মদ মেহবুব আলম রিজভি জানান,অন্যান্য বছর নবী দিবস উপলক্ষে জুলুস ও ধার্মিক অনুষ্ঠান করা হয় কিন্তু এবার করোনা মহামারির কারণে সেই সব বন্ধ করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বশান্তি, ন্যায় ও মানব কল্যাণের পথ প্রদর্শক হযরত মহম্মদের প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে চলার বার্তা এই সব শিবির আয়োজনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এই শিবিরগুলি আয়োজনের ক্ষেত্রে দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম সহযোগিতা করেছে। সকল রক্তদাতা, স্বেচ্ছাসেবক ও আয়োজক সংগঠনের সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কবি ঘোষ এবং দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ব্লাড সেন্টারের ইনচার্জ ডাঃ করবী কুণ্ডু এবং আসানসোল জেলা হাসপাতাল ব্লাড সেন্টারের ইনচার্জ ডাঃ সঞ্জিত চ্যাটার্জি। দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স ফোরাম এর সহঃ সাধারণ সম্পাদক এবং ফেডারেশন অফ ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স অর্গানাইজেশনের রাজ্য কাউন্সিল সদস্য রাজেশ পালিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল ব্লাড সেন্টার এবং আসানসোল জেলা হাসপাতাল এই সব শিবিরে দান করা রক্ত সংগ্রহ করেছে।