ডেটলাইন ওয়েব ডেস্কঃ সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার পর আজই প্রথম রাজ্যে নির্বাচনী জনসভা করতে আসেন নরেন্দ্র মোদী। শিলিগুড়িতে সভা সেরে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আসেন তিনি। মোদির সভা উপলক্ষ্যে প্রথমবার ব্রিগেডের সভায় ব্যবহার করা হল ১২টি জার্মান হ্যাঙার। রোদের মধ্যে কর্মী-সমর্থকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এই হ্যাঙারের মাথায় ছিল অ্যালুমিনিয়ামের হালকা পাত। ৫৭ লাখ স্কোয়্যার ফিট জুড়ে এই হ্যাঙারগুলি বসানো হয়। জন সমাগম কত হয়েছিল তা নিয়ে বিতর্ক চললেও ব্রিগেডের এই নতুন ব্যবস্থা কিন্তু নজর কেড়েছে। এদিন মোদি তাঁর ভাষনে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই নিজের সরকারের উন্নয়নের কথা যেমন বলেছেন তেমনই বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই জনসভা থেকে পরিবারতন্ত্রকে তিনি হাতিয়ার করে বললেন, “যদি ভারত স্বামী বিবেকানন্দের মন্ত্রে চলত, তাহলে গোটা বিশ্বে ভারত সবার থেকে এগিয়ে থাকত। ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে, কিন্তু মানুষ স্বাধীনতা পায়নি। গণতন্ত্রের নামে পরিবারতন্ত্র ৫৫ বছর দেশকে শাসন করেছে। আমাদের কাছে প্রতিভার অভাব ছিল না। কিন্তু ৫৫ বছরের পরিবারতন্ত্র গরিবের স্বপ্নকে ভুলুণ্ঠিত করে দিয়েছে। বাংলাও আজ পরিবারতন্ত্রের অন্ধকারে ডুবছে। পিসি-ভাইপো মিলে বাংলাকে লুট করছে। এদের থেকে মুক্তি পেতে ভোট দিন। পরিবারতন্ত্রকে দেশ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে ভোট দিন।” মাস দুই আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে ব্রিগেডে ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার সভাকে কটাক্ষ করে মোদি বলেন, “কিছুদিন আগে এখানে মেলা বসেছিল। অন্য রাজ্য থেকে নেতা বাংলায় এসেছিল, শুধু ‘মোদি হটাও’ বলার জন্য। আরে ভাই কেন হঠাতে চান? মোদি কি এমন অন্যায় করেছে? গরিবদের বাড়ি, শৌচাগার, রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ, বিনামূল্য চিকিৎসা, এসব দেওয়া যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি সেই অন্যায় করেছি। এর আগে কেউ ভেবেছিল উচ্চবর্গের মানুষের জন্য সংরক্ষণ হবে, কেউ ভেবেছিল পাঁচ লাখ টাকা রোজগার করলেও কর দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এরপর বাংলায় আর তোলাবাজিও চলবে না সিন্ডিকেটও চলবে না।“ অন্যদিকে একই দিনে উত্তরবঙ্গের দিনহাটা থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও মোদিকে পাল্টা দিয়ে বলেছেন,টাকার হাঙর ব্রিগেডে হ্যাঙার দিয়ে সভা করছে। মোদিকে লক্ষ্য করে দিনহাটার সভায় মমতা বলেছেন,‘গরিবদের জন্য কিছু করেনি তৃণমূল সরকার? অপপ্রচার করছেন নরেন্দ্র মোদী। চৌকিদার মিথ্যাচার করবেন না। রোজ রোজ মিথ্যা কথা বলবেন না। বিতর্কে বসুন, আপনি প্রশ্ন করবেন, আমি খোলাখুলি উত্তর দেব। কোনও ভয় নেই আমার। মমতা সরাসরি ঘোষণা করেন ‘এক্সপায়ারি বাবু, আপনাকে প্রধানমন্ত্রী বলব না। আপনার বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে”। তৃণমূল সরকারের সাফল্য তুলে ধরে মমতা বলেন “১০০ দিনের আমরা কাজে সেরা৷ অথচ কয়েকটা গুণ্ডা নিয়ে এসে মোদী চোখ রাঙাচ্ছেন রাজ্যে”৷ সব মিলিয়ে এদিন থেকেই সপ্তদশ লোকসভার আসল প্রচার শুরু হয়ে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।