ডেটলাইন নিউজ ডেস্কঃ হ্যাঁ,ফাঁসির মঞ্চে একথাটাই বলেছিলেন শহীদ ক্ষুদিরাম বসু। ১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল বিহারের মুজাফফরপুরে বিপ্লবী কাজে হাজির হয়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী। তাদের লক্ষ্য ছিলেন নিষ্ঠুর বৃটিশ বিচারক কিংসফোর্ট। রাত সাড়ে ৮টার সময় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে দিয়ে আসা গাড়ির মধ্যে কিংসফোর্ট আছে ভেবে সেই গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে দেয় তারা। কিন্তু গাড়িতে কিংসফোর্ট ছিলেন না। বোমার আঘাতে সেদিন বিদেশী অন্য তিনজনের মৃত্যু হয়। পালাতে গিয়ে দুজনেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। প্রফুল্ল ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজের রিভলবার দিয়ে আত্মহত্যা করলেও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ক্ষুদিরামকে গ্রেফতার করে বৃটিশ পুলিশ। বিচার শুরু হয় ঐ বছরই ২১ শে মে। বিচারক ছিলেন বৃটিশ বিচারক মিস্টার কর্নডফ এবং ভারতীয় দুই বিচারক লাথুনিপ্রসাদ ও জানকিপ্রসাদ। বিখ্যাত আলিপুর বোমা মামলায় ক্ষুদিরামের ফাঁসির সাজা ঘোষনা হয়। রায় শোনার পরে ক্ষুদিরামের মুখে হাসি দেখা যায়। তার বয়স খুব কম ছিল। মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন। বিচারক কর্নডফ তাই তাকে প্রশ্ন করেন, তাকে ফাঁসিতে মরতে হবে সেটা কি সে বুঝেছে ? সেই প্রশ্নের উত্তরে নির্বিকার ক্ষুদিরামকে বিচারক আবার প্রশ্নটি করেন। তখনই ক্ষুদিরাম বেশ তেজ ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছিলেন,‘আমাকে একটু সময় দিলে আমি সারা ভারতবাসীকে শিখিয়ে দিতাম কি করে বোমা বানাতে হয়’। তার সেই উক্তি পরাধীন ভারতীয় ছাত্রযুবদের কাছে স্বদেশী আন্দোলনের যেন এক মন্ত্র হয়ে উঠেছিল। বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দৃঢ় মানসিকতা তৈরী হয়েছিল তাদের মধ্যে। এমনই দেশভক্ত এক দুঃসাহসিক ভারত সন্তানের আজ প্রয়াণ দিবস। তাঁর ১১২ তম শহীদ দিবস সারা দেশেই যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গেই আজ পালিত হয়। এদিন শহর দুর্গাপুরেও নানা কর্মসূচী লক্ষ্য করা যায়। ক্ষুদিরামকে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লিখেছিলেন এবং অনেক গানও তখন রচিত হয়েছিল। তারমধ্যে বিখ্যাত হয়ে আছে এই গানটি- একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি।