দুষ্টের দমন আর সৎ মানুষদের রক্ষার জন্যই আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ

0
895

দিগ্বিজয় গুপ্তঃ সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর সৎ মানুষদের রক্ষা করার জন্য স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস থেকেই তাঁকে ভগবান রুপে পুজো করা হয়। তাঁর আবির্ভাব বিশ্ব মানব জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষদের রক্ষায় তিনি পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেন। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথিকে ভক্তরা শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করে থাকেন। এই বিশেষ দিবসটি সারা দেশেই যথাযোগ্য মর্যাদা,  ধর্মীয় ভাবাবেগ এবং আনন্দ–উৎসবের সঙ্গেই  উদযাপন করেন ভক্তরা। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্র যোগে কৃষ্ণ মধুরায় কংসের কারাগারে মাতা দেবকীর অষ্টম সন্তান রূপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর এই জন্মদিনকে জন্মাষ্টমী বলা হয়। আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ওই সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম ছিল। সেই সময়ে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের উদ্দেশ্যে নিরাকার ব্রহ্ম বাসুদেব ও দেবকীর সন্তান হিসেবে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই যুগে বেশির ভাগ রাজা রাজধর্ম, কুলাচার, ভুলে গিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও অন্যায় –অবিচারের কাজে মত্ত হয়ে উঠেছিলেন। মথুরার রাজা কংস পিতা উগ্রসেনকে উৎখাত করে নিজে সিংহাসনে বসেছিলেন। ত্রাসের শাসন চালিয়েছিলেন জরাসন্ধ, চেদিরাজ, শিশুপাল-সহ অনেক রাজা। কথিত আছে,রাজা জরাসন্ধ ৮৬ জন যুব রাজাকে বলি দেওয়ার জন্য কারাগারে রেখেছিলেন। এ ছাড়া হস্তিনাপুরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন দুর্যোধন-দুঃশাসন। এইভাবে একের পর এক রাজার অবাধ অত্যাচারে মানুষ যখন চরমভাবেই হেনস্থার শিকার ঠিক সেই সময়ে অধর্ম-অবিচার নির্মূল করে ধর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই শ্রীকৃষ্ণরূপে ভগবানের মর্তে আগমন। শ্রীকৃষ্ণ মর্তে এসে একে একে কংস,  শিশুপাল, জরাসন্ধ ও কৌরবদের দর্পচূর্ণ করে ধর্মরাজ্য স্থাপন করেছিলেন। তাই শ্রীকৃষ্ণের সেই ভূমিকা আমাদের বর্তমান সমাজেও ভীষনভাবেই প্রাসঙ্গিক। আমরা যেন তাঁর  সেই মহান ভূমিকার কথা স্মরণে রেখেই দিনটি পালন করি। প্রতিবছর শুভ জন্মাষ্টমীতে শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজন থাকে। বিভিন্ন মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলিতে অগুন্তি ভিড় হয় ভক্তদের। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ প্রকোপের কারণে কোনো শোভাযাত্রা, মিছিল বা সমাবেশ হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দিরেই যা কিছু আচার ও নিয়ম পালন করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here