ডেটলাইন দুর্গাপুর, ৮ অক্টোবর: বাংলার সেরা উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসব নির্দিষ্টভাবে কোনো একটি ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে আবদ্ধ নেই। সমাজের সব শ্রেণীর মানুষই এই উৎসবে সামিল হন। পুজো মণ্ডপে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত দেখেই বোঝা যায় এই উৎসব প্রকৃত অর্থেই এক মিলনোৎসব। ধর্ম বর্ণ সম্প্রদায় ধনী গরীব সব মিলে মিশে একাকার। তার মধ্যেও দেখা যায় আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ আর্থিকভাবে অনেক পিছিয়ে। পুজোর সময় তাদেরও অন্যদের মতো নতুন জামা কাপড় পড়তে ইচ্ছা করে। কিন্তু সাধ থাকলেও তাদের সাধ্য নেই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বস্তি এলাকা ও রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো গরীব মানুষ থাকেন যাদের নিত্য খাবারই জোটে না, সেখানে পুজোর সময় নতুন জামা কাপড় কেনা তো তাদের কাছে কল্পনাতীত। কিন্তু, উৎসব তো সবার। তাই বহু মানুষ ব্যক্তিগতভাবে এবং একাধিক সমাজসেবী সংগঠন রয়েছে যাদের উদ্যোগে এই সব দুস্থ মানুষদের মুখেও হাসি ফোটে। তারাও নতুন জামা কাপড় পড়ে সামিল হতে পারে বাংলার এই সেরা উৎসবে। দুর্গাপুরেও বেশ কয়েকটি এই ধরনের সংস্থা আছে যারা শুধু পুজোর সময় নয়, সারা বছরই দুস্থ ও পথে থাকা ভবঘুরে মানুষগুলির পাশে থাকে, তাদের সেবার দায়িত্ব পালন করে থাকে।

এবার পুজোর সময় প্রেরণা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় বেশ কিছু মানুষকে নতুন বস্ত্র দান করেছে। এছাড়াও সংস্থার পক্ষে এই ধরনের অসহায় মানুষদের প্রতিদিন অন্যদানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানান এই সংস্থার কর্ণধার সৌরভ আইচ, যিনি সবার কাছে বাবুয়া নামেই পরিচিত। বিভিন্ন সময় এই ধরনের মানুষগুলির প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয় বলে জানান তিনি। এদের মতোই সামাজিক কাজ করে চলেছে ‘ভালোবাসার ভিখারী’নামে একটি সংগঠন। এবার পুজোর আগে তাদের পক্ষ থেকেও মহা পঞ্চমীর দিন দূর্গাপুর বাস স্ট্যান্ড কালীবাড়ি এলাকায় দুস্থ ছেলেমেয়েদের পুজোর জন্য নতুন জামা কাপড় দান করা হলো। এই সংস্থার নামের সঙ্গেই মিশে আছে তাদের কাজের পরিচয়। সংস্থার পক্ষে শিল্পী পাল জানান, বাংলার শারদীয় দুর্গাপূজা সবার। দুস্থ মানুষগুলি যদি এই উৎসবে সামিল হতে না পারে তাহলে এই উৎসবের বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে কি করে? উৎসব তো সবার তাই আমরা আমাদের সাধ্য মতো এই সব দুস্থ পরিবারের ছেলেমেয়ে মহিলা পুরুষদের পুজোর নতুন পোশাকের ব্যবস্থা করেছি। এই কাজে আরও অনেকে সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান শিল্পী।