ডেটলাইন ওয়েব ডেস্কঃ আজ বুধবার সারা দেশে পালন করা হচ্ছে গুরু পূর্ণিমা। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। গুরুকে সম্মানের সঙ্গে শ্রদ্ধা ও ভক্তি জানানোর বিশেষ দিনই হল এই গুরু পূর্ণিমা। গুরু পূর্ণিমা একটি বৈদিক প্রথা। এই দিনে শিষ্য তার গুরুকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। গুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে বৈদিক যুগ থেকেই আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিকে বিশেষ ভাবে নির্ধারণ করে ‘গুরু পূর্ণিমা’ উদযাপন করার প্রথা চলে আসছে। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, বোধিজ্ঞান লাভের পরে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় সারনাথে প্রথম শিষ্যদের উপদেশ দেন গৌতম বুদ্ধ। ‘গুরু’ শব্দটি ‘গু’ এবং ‘রু’ এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। ‘গু’ শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার’ বা ‘অজ্ঞতা’ এবং ‘রু’ শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার দূরীভূত করা’। অর্থাং ‘গুরু’ হলেন সেই ব্যক্তি যিনি অন্ধকার দূরীভূত করে আমাদের জীবনে আলো নিয়ে আসেন। যিনি পরম জ্ঞান দান করেন তিনিই গুরু। প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশে গুরুদের সম্মানজনক স্থান দেওয়া হয়েছে। তাই গুরুকে আমরা ঈশ্বরতুল্য বলেই মনে করি। সনাতন হিন্দু ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুসারে শিবের রূপে জগতের সমস্ত আচার্যদের “গুরু পূজা” সম্পন্ন করা হয়। শিবের থেকে সমগ্র সনাতন ধর্মশাস্ত্র প্রকটিত হয়েছে বলে জানা যায়। তাই শিব আদিগুরু বলে জগদবিখ্যাত। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, মহর্ষি বেদ ব্যাস আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই একে ব্যাস পূর্ণিমাও বলা হয়। এই দিনে শিষ্যরা তাঁদের গুরুকে দক্ষিণা, ফুল, বস্ত্র ইত্যাদি নিবেদন করে। এই দিনে শিষ্যরাও তাদের সমস্ত দোষ ত্যাগ করেন। বিশ্বাস করা হয় যে,গুরুই আমাদের রক্ষার পথ দেখাতে পারেন। তাই গুরুর দেখানো পথে চললে জীবনে শান্তি, আনন্দ ও মোক্ষ প্রাপ্ত হয়। এই বিশ্বাস ও প্রাচীন ঐতিহ্য থেকেই প্রতি বছর বাংলা আষাঢ় মাসের পূর্ণিমাকে ‘গুরু পূর্ণিমা’ হিসেবে আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে পালন করে থাকি।