মানবতার প্রতীক মাদার টেরেজার জন্মদিন

0
844

ডেটলাইন ওয়েব ডেস্কঃ আজ বিশ্ব মানবতার এক মহান প্রতীক মাদার টেরেজার জন্মদিন পালনে ব্যস্ততা দেখা গেল কলকাতাসহ দেশবিদেশের বিভিন্ন মিশনারিজগুলিতে। মাদার টেরেজা সেই মহীয়সী নারী, যিনি আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সারাবিশ্বের মানুষের হৃদয়ে আজও অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। বিভিন্ন বয়সী ছেলেমেয়ে, যারা বিভিন্ন দিক থেকে সমাজে অবহেলিত, মাদার টেরেজা তাদেরই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাদার হাউসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাদার টেরেজা। মাদার টেরেজা রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত বিশ্বখ্যাত সমাজসেবিকা। তার জন্ম আলবেনিয়ায় ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট। মাত্র ৯ বছর বয়সে তাকে পিতৃহারা হতে হয়। আকস্মিক এ বিপর্যয়ের ফলে টেরেজার মা ভীষণ মুষড়ে পড়েন। সংসারের সব দায়দায়িত্ব এসে পড়ে টেরেজার বড় বোনের ওপর। কাপড় বিক্রি, অ্যামব্রয়ডারির ব্যবসা দিয়ে তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু হলো। ১৯৩১ সালের ২৪ মে সর্বপ্রথম দারিদ্র্য, বাধ্যতা ও সংযমের সাময়িক সংকল্প গ্রহণ করেন টেরেজা। সিস্টার টেরেজার নতুন প্রশিক্ষণ শুরু হলে তাকে হিমালয়ের কোলের ছোট্ট শহর দার্জিলিংয়ে পাঠানো হলো। লরেটো কনভেন্ট স্কুলে শুরু হলো তার শিক্ষিকা জীবন। পাশাপাশি তিনি একটি হাসপাতালেও কাজ করতেন। এখানেই সর্বপ্রথম দুঃখ ও দারিদ্র্যের সঙ্গে তাকে সংগ্রাম করতে হয়, যা ছিল তার কল্পনারও বাইরে। দার্জিলিংয়ের কাজের মেয়াদ শেষ হলে তাকে আবার ফিরে আসতে হলো কলকাতায়। পাহাড়ি দেশের বিশুদ্ধ মধুর বাতাস আর ফুলে ছাওয়া প্রান্তর ছেড়ে কলকাতা মহানগরীর পুব প্রান্তের বস্তি এলাকায় এন্টালিতে লরেটো সিস্টারদের ডেরায় বসবাস করার জন্য চলে এলেন তিনি। সেখানে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়তে আসত। শিক্ষিকা হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ভালো এবং সফল। ১৯৩৭ সালের ১৪ মে সিস্টার টেরেজা তার জীবনের গতি পরিবর্তনের চিন্তা করে সন্ন্যাসিনীর জীবন বেছে নিলেন। তখনকার দিনে সন্ন্যাসিনীরা মঠের চার দেয়ালের মধ্যেই আবদ্ধ থাকতেন। একমাত্র টেরেজাই প্রথম মঠের বাইরে বের হয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে আরম্ভ করেন। দুস্থ মানুষদের সেবায় আত্মোৎসর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ মাদার টেরেজা ১৯৭৯ সালে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে পোপ জন শান্তি পুরস্কার, ১৯৭২ সালে জওহরলাল নেহরু এবং ভারতরত্নসহ বিভিন্ন দেশের মোট ৮৪টি পুরস্কার ও সাম্মানিক উপাধিতে তিনি ভূষিত হন। আজ মাদারের জন্মদিনে আমরাও তাকে শ্রদ্ধা জানাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here